কাঁদলে কি মানুষের কষ্ট কমে?
কিন্তু কেন রহস্যময় এই ইমোশনাল টিয়ার আর এর উত্তর হচ্ছে এর রাসায়নিক গঠন। ইমোশনাল টিয়ার এর রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এতে বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেস হরমোন রয়েছে। যা ন্যাচারাল পেইনকিলার বা ব্যাথানাশক হিসেবে কাজ করেন। ইমোশনাল টিয়ার যা আমরা কান্না নামে জানি আসলে অতিরিক্ত দুঃখ ও মানসিক চাপের বিরুদ্ধে আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা সৃষ্টি করে। মানসিকভাবে খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে গেলে যেমন অতিরিক্ত সুখ কিংবা দুঃখের অবস্থায় এই ইমোশনাল টিয়ার বের হয়ে আসে। সিনেমার জগতে গ্লিসারিন ব্যবহার করে চোখ দিয়ে কৃত্রিমভাবে অশ্রু ঝরাতে দেখা যায় কিন্তু সেই অশ্রু সত্য নাকি মিথ্যা তা কিন্তু খুব সহজেই এক রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বের করা সম্ভব।
এবার আসি অশ্রু কেন আসে
বিজ্ঞানীদের মতে মস্তিষ্কের আবেগপ্রবণ যে অঞ্চল রয়েছে হাইপোথ্যালামাস ও বেজাল গ্যাংগালোর ব্রেইন স্টেম এর ল্যাকটিমাস নিউক্লিয়াস যুক্ত থাকে। মানুষ তখন আবেগপ্রবন হয় তখনই ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে অশ্রু উৎপাদন হয়। উৎপাদিত অশ্রু অক্ষিগুলো ও অক্ষিপটের মাঝে পিচ্চিল একটি স্তর সৃষ্টি করে।
প্রতিবারই আমরা যখন চোখের পলক ফেলি তখন সেই তরলের কিছু অংশ বাইরে বের হয়ে আসে এটি চোখকে ভেজা রাখে এবং চোখের শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। আর আমরা যখন কাঁদি তখন তরল চোখের বাইরে বেরিয়ে আসে যাকে আমরা চোখের পানি বা অশ্রু বলি, তবে অশ্রু ঝরার আরো অনেক কারণ রয়েছে। যেমন সাহায্য প্রার্থনা করতে বা শারীরিক বা মানসিক কষ্ট দূর করতে সামাজিকভাবে কোন সম্পর্ক স্থাপন করতে আমাদের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে কিংবা বিভিন্ন সময় সহানুভূতি অর্জন করতে ও মানুষ কান্না করে এমনকি অনেক সময় নিজের স্বার্থ বা সুবিধা আদায় করতে ও মানুষ কাঁদে। তবে এর বাইরেও আরেকটি বিবেচ্য বিষয় রয়েছে যার কারণে মানুষের চোখে অশ্রু ঝরতে পারে। শরীরের কোন সমস্যার কারণেও এমন হতে পারে। যেমন অশ্রুনালী বন্ধ হয়ে গেলেও চোখে অশ্রুর প্লাবন নামতে পারে। এধরনের কান্নার প্রতি আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। একে বলে প্যাথলজিক্যাল কান্না আবার কিছু কিছু রোগ যেমন স্ট্রোক আলঝেইমার রোগের কারণেও চোখ থেকে পানি অনবরত পড়তে থাকে। গবেষকরা বলেন এরকম অতিরিক্ত কান্নাকাটি বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনা ছাড়াও হতে পারে।
বেশি কাঁদলে মাথা ব্যথা কেন হয়? এটা খুবই কমন একটি প্রশ্ন। উত্তর হচ্ছে বেশিক্ষণ কাঁদলেই বা বেশি অশ্রু ঝরলে মানুষের মাথা ব্যথা হয় কিন্তু এর বিপরীতে দেখা যায় অশ্রুর অনেক প্রবাহ।
বিজ্ঞানীদের দাবি লাক্রিমাল গ্রন্থিতে যখন অতিরিক্ত অশ্রু উৎপাদিত হয় তখন অতিরিক্ত অংশ নাকের ছিদ্র বা নাসারন্ধ্র রয়েছে আমাদের তার ভেতর দিয়েও প্রবাহিত হয় তাহলে বাস্তবে চোখের জল নাকের জল এই যে ব্যাপারটা এটি দেখা যায়। নাকের ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের এ ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা নাকের জন্য ভালো বলে মনে করেন। তবে অতিরিক্ত কান্নার ফলে মাথা ব্যথা একারনে হয়। এর ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীরা বলছেন অতিরিক্ত কাঁদলে যে অতিরিক্ত অশ্রু উৎপন্ন হয় এর ফলে ল্যাক্রিমাল গ্রন্থিতে পানিশূন্যতা দেখা যায় এটি মাথা ব্যথার মূল কারণ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে একজন মানুষ দৈনিক কী পরিমাণ কাঁদতে পারেন? একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের লাক্রিমাল গ্রন্থিতে গড়ে প্রতিদিন 10 আউন্স অশ্রু উৎপাদিত হয়। তবে লিঙ্গ ভেদে এই পরিমাণ এর পার্থক্য হয়ে থাকে। বেশিভাগ সময় ছেলেদের প্রতি বলতে শোনা যায় যে ছেলেদের কাঁদতে নেই ছেলেদের কান্না মানায় না, আবার অনেকে বলে যে উত্তরাধিকারসূত্রে কান্না মেয়েদেরই শোভা পায় ,আসলেই কি তাই মেয়েরা বেশি কাঁদে নাকি ছেলেরা গবেষকদের মতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই কাঁদে। তবে স্বাভাবিক ভাবে একজন নারী একজন পুরুষ থেকে বেশি কাঁদে
0 মন্তব্যসমূহ
Please validate the captcha