১৭ ইঞ্চি হলেই ১ হাজার কোটি টাকা!! কেন এত দাম একটা তক্ষকের, দেখুন আসল কারন!



জন্মের পর ছানা প্রায় ৯ ইঞ্চি হয়ে থাকে। তবে হাঁস পা তক্ষকের চাহিদা খুব। ১৫০ গ্রাম হলে বিক্রি করা যাবে হাজার কোটি টাকা। দেশের যেখানেই থাকুক না কেন এর সন্ধানে মরিয়া পাচার কারীরা। প্রয়োজনে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে সংগ্রহে ও আপত্তি নেই। কারণ আকাশ ছোয়া দাম। কিন্তু সন্ধান পাওয়া খুবই দুস্কর। বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে প্রাণীটি। সাধারণত পিঠেরদিক ধূসর। কখনো ধূসর সবুজ আবার নীলচে ধূসর সবুজ ও হয়ে থাকে। শরীরে লাল সাদা ও ধূসর রঙের ছিপ ছিপ দাগ থাকে। কিছু তক্ষক আবার রং পাল্টাতেও ওস্তাদ।

 স্থানীয়রা তাদের বলেন বহুরূপী। তক্ষকের মাথা বড়। দৌর্ঘ্যে ১.৬ সে মি থেকে ৭ সে মি। ওজন ১৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম। গ্রীস্ম ও বর্ষায় প্রযোজনের সময় ছাড়া স্ত্রী ও পুরুষ তক্ষক এক ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। স্ত্রীরা খুব বেশি হলে ১ থেকে ২ টি ডিম্ দেয়। হাঁস  পা গুলোর দাম খুব চড়া। ইঞ্চির মাপ ধরা হয় চোখ থেকে লেজ পর্যন্ত। মুরগি পা গুলো ২৫৫ গ্রাম ওজন ও ১৫.৫ইঞ্চি লম্বা হতে হবে। বার্মিস্টার ওজন ৩৫০ গ্রামের কম হলে বিক্রির অনুপযোক্ত। 

জানা যায় এ পর্যন্ত ঢাকা সহ বিভিন্ন প্রশাসনের হাতে অনেকেই তক্ষক সহ ধরা পড়েছেন। এই চাহিদার জন্য ডুয়ার্স সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে তক্ষক ভুটান অথবা নেপাল হয়ে চীন ,উত্তর আমেরিকা , দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান অস্ট্রোলিয়ায় পাচার হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ওজনের তক্ষকের দাম ও পাওয়া যাচ্ছে ভালোই। তক্ষকের বাশ ভূমি ভারত, নেপাল , বাংলাদেশ , ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া , কম্বোডিয়া,লাওস, থাইল্যান্ড , ভিয়েতনাম, জাপান, দক্ষিণ চীন, উত্তর অস্ট্রেলিয়া সিংগাপুর সহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে দেড় হাজার প্রজাতির তক্ষক রয়েছে।

 উত্তর বঙ্গের ডুয়ার্সের স্যাতস্যাতে পরিবেশে পুরোনো গাছের কোটল অথবা পুরোনো কাঠের বাড়িতে তক্ষক বেশি দেখা যায়। মুখে টক টক শব্দই তক্ষকের জন্য কাল। বন ও বস্তির ছেলে রা প্রাণীটিকে পাকড়াও করে অল্প মূল্যে তুলে দিচ্ছে পাচার কারীদের হাতে। পর্যটকের বেশে ঘুরেবেড়া পাচার কারীরা তা চড়া দামে বিক্রি করছে। 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রাণীটির মূল্য অনেক।  চা বাগান ও বোন বস্তির ছেলেদেরকে তক্ষক ধরার কাজে ব্যবহার করতো। গত কয় বছরে ছবিটা পাল্টে গেছে। শহরের বিভিন্ন পেশার মানুষ বোন বস্তির ছেলেদের সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে তক্ষক ধরার কাজে ব্যবহার করছে। অনেকেই তক্ষকের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। 

তক্ষক কেন  এতো দামি , সরীসৃপ গবেষকদের মতে মূলত এইচআইভি প্রতিষেধক গবেষনায় তক্ষকের দেহাংশ ব্যবহার করা হয়। প্রাণীটির চামড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরণের বিলাস সামগ্রীও তৈরী করা হয়। চীন তিব্বতে তক্ষকের দেহাংশর তৈরি তেল যৌন ক্ষমতা বর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেখানে তক্ষকের দেহাংশ দিয়ে মাদক তৈরী হচ্ছে। তক্ষক নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা তথা গুজবের শেষ নেই।

 চলুন জানা যাক তক্ষক সম্পর্কিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা ও সেগুলোর সত্যতা। সোনা ছাড়া শরীর থেকে ছাড়ানো যায় না। অনেকেই বলেন তক্ষকের গুলুর মতো আঠালো আঙ্গুল যুক্ত পা রয়েছে। তাই মানুষের ত্বক থেকে সহজে ছারে না। মূলত তক্ষক শক্ত ভাবে কোথাও আটকে থাকতে পারে। এরা নিজেদের ওজনের থেকে প্রায় ৮ গুন্ ভারী বস্তু বহন করতে সক্ষম। কিন্তু পায়ে আঠা বা গুলু আছে এটা ঠিক নয়। বরং পায়ে চুলের মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গঠন আছে। যেগুলো কোনো বস্তুর উপর আটকে থাকতে সহায়তা করে। তবে এদের ছাড়াতে সোনা লাগে না। যদি তক্ষক কামড়ে ধরে তখন এক টুকরো কাপড় বা গাছের ডাল দ্বারা ছাড়িয়ে নিতে পারবেন। 

ভবিষ্যৎ গণনা , অনেক দেশে অনেক লোকে বিশ্বাস করেন তক্ষক ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে। এজন্য তক্ষককে বলে দেওয়া হয় তাদের কতজন সন্তান হবে। উত্তরটি তক্ষকের ডাকের সময় শব্দ সংখ্যার উপর হিসাব করা হয়। এটি যতবার শব্দ করবে ততজন সন্তান হবে। খুবই হাস্যকর যদি এটি ১২ থেকে ১৪ বার শব্দ করে তো কি হবে আপনার।  কারণ এরা একসাথে ১২ থেকে ১৪ বার শব্দ করতে পারে। 
বিষাক্ত, অনেকেই বলেন এটি বিষাক্ত এবং রক্ত চুষে নেয়। বাস্তবতা হচ্ছে এরা বিষাক্ত নয়। তবে এদের কামড় যন্ত্রনা দায়ক হয়। এরা শরীরের বর্ণ পরিবর্তন করতে পারে। অর্থাৎ পারিপার্শিক পরিবেশের বর্ণের সাথে নিজেকে মিলিয়ে ফেলে। তাই অনেক সময় লালচে বর্ণ ধারণ করে থাকে। তাই অনেকেই বলে থাকেন রক্ত চোষে তাই রক্তর রং ধারণ করে। 

বজ্র পাত ডেকে আনা, ফিলিপাইনের অনেক নগর বা গ্রামাঞ্চলে বিশ্বাস করা হয় তক্ষক বজ্র পত্ টেনে আনে। 

সান্ডা তেল, আমাদের দেশে বিভিন্ন হাট বাজার এমনকি  শহরের বিভিন্ন স্থানে সান্ডা তেল নামে তক্ষকের তেল বিক্রি করা হয়। পুরুষ যৌনাঙ্গের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এই তেল অনেকেই কিনছেন। ফলে নির্বিচারে মারা হচ্ছে এই প্রাণীটি। বাস্তবে এই তেলের এমন গুন্ নেই। 

প্রিয় দর্শক আপনারা এই পোস্টির মতামত কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ